সিলেটের বিশ্বনাথে বন্যায় কবলিত ১১ পরিবারের প্রায় অর্ধশত মানুষ আশ্রয় পায়নি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বৃহস্পতিবার রাতে বন্যায় কবলিত উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের চকরামপ্রসাদ গ্রামের পরিবারগুলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিতে এলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন অর্ধশত বন্যার্ত মানুষকে আশ্রয় না দিয়ে পানি, বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ ও বাথরুমের তালা মেরে চলে যান। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কাদিপুর শাহজালাল পল্লী পরিষদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয় এই বানবাসী পরিবারগুলো। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।
আশ্রয় নেয়া নিপা বেগম, নিবন্ধ বিকাশ দাশ ও বাহার বেগম জানান, তাদের ঘরে পানি উঠায় তারা পরিবার নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন এসে বিদ্যুৎ, পানি, বাথরুম বন্ধ করেন এবং তাদের সাথে অশালিন আচরণ করেন। তারা তাৎক্ষণিক স্থানীয় ইউপি সদস্যের সাহায্য নিলে তিনিও ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার সরেজমিন গিয়ে তাদেরকে হাসপাতালের পাশে কাদিপুর শাহজালাল পল্লী পরিষদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেন। পরে তাদেরকে শুকনো খাবারও দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে তাদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী ও গো-খাদ্য বিতরণ করেন ইউএনও।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয় জানাজানি হলে ফুসে উঠে এলাকার জনসাধারণ। শুক্রবার বেলা ২টায় স্থানীয়রা হাসপাতালের সামনে আন্দোলনের ডাক দেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান সুইট সরেজমিন গিয়ে সবাইকে আশ্বস্থ করে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আফিজ আলী বলেন, ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমনকে আমি অনেক ভাবে বলেছি কিন্তু তিনি আমার কথা শুনেন নি। তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের বন্যায় ২০টি পরিবার এই উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল।
এবিষয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন বলেন, আমার উপর আনিত অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তিনি বলেন, আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোকে পাশের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করেছি। তারা গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। এখানে যেকোনো ধরণের অঘটন ঘটতে পারে। কারণ হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া এই হাসপাতাল আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নেওয়া হয় নি।