সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে বন্যা কবলিত মানুষের আশ্রয় নিয়ে অনাকাঙ্খিত এই ঘটনাটি আমার উপর মিথ্যা বানোয়াট, পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা হয়েছে। এটি আমাকে হেওপতিপন্ন করার জন্য একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। শনিবার (২২ জুন) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এভাবেই বলছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর প্রধান ইউএইচও ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ডা. সুমন বলেন, অতীতে একটি গোষ্টি এই হাসপাতালকে ঘিরে সিন্ডিকেট তৈরী করে হাসপাতালের ঔষধ বিক্রিসহ নানা সুবিদা নিত। পাশাপাশি মাস্টার রুলে ওই এলাকার কয়েকজন চাকরিরত অবস্থায় অনিয়মের সাথে জড়িত ছিল। তাদের চাকরিচ্যুত ও সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেয়ায় এখন তারা সঙ্গবদ্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারসহ নানা কুৎসা রটনা করছে। তিনি বলেন, উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জন্য ওই ইউনিয়নে ১২টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। সেসকল কেন্দ্রে না গিয়ে তিনি কেন রামপাশা ইউনিয়নের হাসপাতালে আশ্রয় নিতে আসেন? এছাড়া রামপাশা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জন্য ১১টি আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। এই হাসপাতালের একশ গজ দূরে শাহজালাল প্রাইমারী স্কুলকেও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়। চকরামপ্রসাদ গ্রামের যারা বন্যায় কবলিত হয়েছেন তারা ওই স্কুলে আশ্রয় নিবেন। সেই আশ্রয় কেন্দ্র ফাঁকা রেখে তারা গ্যাস সিলিন্ডার সাথে নিয়ে কেন হাসপাতালে উঠবেন। আমার সাথে আলাপ না করেই ওই সিন্ডিকেট সংঘবদ্ধ চক্রটি স্থানীয় ইউপি সদস্য আফিজ আলীকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এটা করেছেন।
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বানভাসী পরিবারের সাথে কোন খারাপ আচরণ করা হয় নি। তাদেরকে বিনয়ের সাথে বলা হয়েছে যে এটা আশ্রয়কেন্দ্র নয়। তারা সেটা শুনেন নি। বরং তাদের পক্ষ হয়ে স্থানীয় মেম্বার ও কিছু লোকজন একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছিলেন।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের নতুন বিল্ডিংয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্যুতের সমস্যা এজন্য তিনতলার এই রুমটি তালা দেয়া হয়েছে ঈদের আগে। বিদ্যুতের সমস্যা থাকায় মটরে পানিও উঠছে না। তাই বাথরুমে পানিও ছিল না। বিদ্যুতের সমস্যাটি আমি আমাদের টেকনিশিয়ান দ্বারা ঠিক করতে না পেরে পল্লিবিদ্যুতের ডিজিএমকে বলেছি। তিনিও তার লাইনম্যান পাঠিয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন নি। পরে আমাকে বলেছেন ঠিক না হওয়া পর্যন্ত এই বিল্ডিংয়ে বিদ্যুতের ভারী যন্ত্র যাতে ব্যবহার না করা হয়।
তবে, এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আফিজ আলী বলেন, ডা. সুমনের সাথে আগে অনেকবার কথা বলেছি। আমি বার বার বলেছি এক ঘন্টা সময় দেন। আমি ব্যবস্থা করছি। কিন্তু তিনি আমার কোন কথা শুনেন নি। বরং আমাকে হুমকিও দিয়েছেন। ওইদিনের ঘটনাটি পুরো ভিডিও আমার কাছে আছে।
উল্লেখ, বৃহস্পতিবার রাতে বন্যায় কবলিত উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের চকরামপ্রসাদ গ্রামের পরিবারগুলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিতে এলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন অর্ধশত বন্যার্ত মানুষকে আশ্রয় না দিয়ে পানি, বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ ও বাথরুমের তালা মেরে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠে। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কাদিপুর শাহজালাল পল্লী পরিষদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয় এই পরিবারগুলো।