৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচনে জামানত হারিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গৌছ খানসহ ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী। পাশাপাশি ২ ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ মোট ৮ প্রার্থী জামানত হারাতে যাচ্ছেন। এ নির্বাচনে বেশ আলোচিত বিষয় ছিলো দুই চাচাতো ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে নিয়ে। গৌছ খান নিজের চাচাতো ছোটভাই প্রবাসী বিএনপি নেতা সেবুল মিয়ার চেয়ে অর্ধেক ভোট পেয়ে জামানত হারাতে চলেছেন তিনি।
আইন অনুযায়ী নিবার্চনে একজন প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগ ভোট না পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। এবাবের উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে বিশ্বনাথ উপজেলায় ১ লাখ ৮৮ হাজার ৩৭ ভোটারের মধ্যে ৬০ হাজার ৪১৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সেই ভোটের আটভাগের একভাগ হচ্ছে ৭ হাজার ৫৫৩টি।
জামানত হারানো ৬ প্রার্থীরা হলেন- সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা গৌছ খান (কই মাছ) ৫ হাজার ৭৮৮ভোট, প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা শমসাদুর রহমান রাহিন (শালিক পাখি) ২ হাজার ১৫০ ভোট, প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এআর চেরাগ আলী (ঘোড়া) ১ হাজার ৬৪ ভোট, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী এনাম (মটরসাইকেল) ৯৪১ ভোট, প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন (উট) ৫১৮ ভোট ও প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আকদ্দুছ আলী (হেলিকপ্টার) প্রতীকে ৪০৩ ভোট পেয়েছেন।
এদিকে, নির্বাচনে হাড্ডাহাডি লড়াইয়ে মাত্র ৩৫৪ ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ চৌধুরী। তিনি কাপ পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৩২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ আনারস প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১২ হাজার ৯৬৮ ভোট। আর দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী প্রবাসী বিএনপি নেতা সেবুল মিয়া ১১ হাজার ৬৯৯ ভোট পেয়ে ৩য় হয়েছেন। পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহবায়ক আলতাব হোসেন টেলিফোন প্রতীকে ৮ হাজার ৭০৩ ভোট পেয়ে ৪র্থ হয়েছেন।
অপরদিকে, বিপুল ভোটে বেসরকারীভাবে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট। তিনি মাইক প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আল ইসলাহ’র ইসলাম উদ্দিন বই প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১৩ হাজার ৫১২ ভোট, বিএনপি নেতা আব্দুর রব চশমা প্রতীকে ১১ হাজার ৪০ ভোট পেয়ে ৩য় হয়েছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. সিরাজ মিয়া ৮ হাজার ৩০৫ ভোট পেয়ে ৪র্থ হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বাকি দুই প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন, বিএনপি নেতা কাওছার খান তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৩২৯ ভোট ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পার্থ সারথী দাশ পাপ্পু টিয়াপাখি প্রতীকে ৩ হাজার ৭১৮ ভোট পেয়েছেন।
অপরদিকে, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে করিমা বেগম কলস প্রতীকে ২৩ হাজার ৬৫৯ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জুলিয়া বেগম ফুটবল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১৮ হাজার ১৫৬ ভোট। আর সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেত্রী বেগম স্বপ্না শাহিন প্রজাপ্রতি প্রতীকে ১৫ হাজার ৩৪২ ভোট পেয়ে ৩য় হয়েছেন। বুধবার রাত পৌণে ১টায় ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটানিং কমকর্তা স্বর্ণালী চক্রবর্তি।